স্ক্যাম মেসেজ চিনবেন যেভাবে: মোবাইল, ইমেইল ও সোশ্যাল মিডিয়ার প্রতারণা থেকে বাঁচার উপায়

বর্তমান ডিজিটাল যুগে প্রতিদিন আমরা বিভিন্ন মাধ্যমে — মোবাইল মেসেজ, ই-মেইল বা সোশ্যাল মিডিয়া— অসংখ্য বার্তা পাই। এদের মধ্যে অনেকগুলো বার্তা বিশ্বাসযোগ্য মনে হলেও, আসলে তা হতে পারে স্ক্যাম বা প্রতারণার ফাঁদ।

একটু অসতর্ক হলেই আপনি হারাতে পারেন ব্যক্তিগত তথ্য, এমনকি আর্থিক ক্ষতিও হতে পারে। তাই, সচেতনতা এবং প্রতারণামূলক বার্তা চেনার দক্ষতা আমাদের সবারই থাকা প্রয়োজন।

ছবিঃ AI দ্বারা তৈরি.

⚠️ স্ক্যাম মেসেজ চেনার কার্যকরী উপায়সমূহ

১. অজানা প্রেরকের বার্তা

যদি আপনি এমন কারো কাছ থেকে মেসেজ পান যার নাম বা নম্বর আপনার কাছে অপরিচিত, তাহলে সেটি অবশ্যই সন্দেহজনকভাবে বিবেচনা করুন। স্ক্যামাররা সাধারণত নকল নাম্বার বা নতুন ইমেইল অ্যাড্রেস ব্যবহার করে থাকেন।

২. লোভনীয় ও অবিশ্বাস্য অফার

যেমন- “আপনি লটারি জিতেছেন!”, “ফ্রি উপহার claim করুন” — এই জাতীয় বার্তা সাধারণত মানুষকে আকৃষ্ট করার ফাঁদ। বাস্তবে, এসব অফার মিথ্যা এবং প্রতারণার উদ্দেশ্যেই প্রেরণ করা হয়।

৩. তাড়াহুড়োর চাপ তৈরি করা

স্ক্যামাররা আপনাকে এমনভাবে চাপ দেয় যেন আপনি ভেবে না দেখে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেন। যেমন: “আজই ফরম পূরণ না করলে আপনার অ্যাকাউন্ট বন্ধ হবে”, “৫ মিনিটের মধ্যে টাকা পাঠান” ইত্যাদি।

৪. সন্দেহজনক লিংকে ক্লিকের অনুরোধ

যেকোনো অজানা লিংকে ক্লিক করা অত্যন্ত বিপজ্জনক। এসব লিংক আপনাকে নিয়ে যেতে পারে ভুয়া ওয়েবসাইটে যা দেখতে হুবহু মূল সাইটের মতো, কিন্তু সেখানে দেওয়া তথ্য সরাসরি চলে যাবে স্ক্যামারের কাছে।

৫. ব্যক্তিগত তথ্য চাওয়ার চেষ্টা

কোনো মেসেজে যদি ন্যাশনাল আইডি নম্বর, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ডিটেইলস, OTP বা পাসওয়ার্ড চাওয়া হয়, তাহলে সেটা শতভাগ স্ক্যাম। কোনো অফিসিয়াল প্রতিষ্ঠান এ ধরনের তথ্য কখনো মেসেজে চায় না।

৬. বানান ও ভাষাগত ভুল

স্ক্যাম মেসেজে প্রায়ই দেখা যায় ভুল বানান, অদ্ভুত বাক্যগঠন বা অস্পষ্ট ভাষা। উদাহরণ: “আপনার এ্যাকাউন্ট ব্লকড হইছে, ক্লিক কর এখনই”। এগুলোও স্ক্যামের একটি ক্লাসিক লক্ষণ।

৭. অফিসিয়াল নয় এমন নম্বর/ইমেইল

যদি কোনো প্রতিষ্ঠান পরিচয়ে কেউ ব্যক্তিগত নম্বর থেকে বার্তা পাঠায়, কিংবা অফিশিয়াল ইমেইল অ্যাড্রেস ব্যবহার না করে, তাহলে তা অবশ্যই সন্দেহজনক।

✅ স্ক্যাম মেসেজ পেলে কী করবেন?

• মেসেজটি এড়িয়ে যান এবং উত্তর দেবেন না।
• কোনো লিংকে ক্লিক করবেন না বা অ্যাপ/ফাইল ডাউনলোড করবেন না।
• সন্দেহজনক হলে প্রতিষ্ঠানের অফিসিয়াল হেল্পলাইন নম্বরে যোগাযোগ করুন।
• আপনি চাইলে বিটিআরসি (BTRC) বা সাইবার ক্রাইম ইউনিট–এ অভিযোগ জানাতে পারেন।

🔐 শেষ কথা

প্রযুক্তি যেমন আমাদের জীবনকে সহজ করেছে, তেমনি এটি প্রতারণার ক্ষেত্রেও নতুন পথ খুলে দিয়েছে। তাই সবসময় সচেতন থাকুন এবং যেকোনো বার্তা পেয়ে যাচাই করার অভ্যাস গড়ে তুলুন।

স্মার্ট ব্যবহারকারী হন, স্ক্যামের শিকার হবেন না!